গত পোস্ট এ আমরা lh test কেন করা হয় সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। আজকে আমরা lh test এর নরমাল রেঞ্জ নিয়ে ,বেশি বা কম হলে কি হয় সে সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।এছড়াও lh কমানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করা হবে। আগের পোস্ট টি দেখতে নিচে পোস্ট লিঙ্ক দেয়া থাকবে দেখে নিতে পারেন।
Lh test নরমাল রেঞ্জ কত?
নরমাল রেঞ্জ সাধারণত রিপোর্ট ইউনিট এর উপর নির্ভর করে বা মেশিন এর উপরে ভিত্তি করে পরিবর্তন হলেও প্রায় সব রিপোর্ট কাছাকছি থাকবে।
আমরা ধারণা পবার জন্য একটি ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড এর lh রিপোর্ট এর নরমাল রেঞ্জ দিচ্ছি।
Lh test normal range :
- Prepuberty Male: <00.50 mIU/ml.
- Adult Male: 02.00-12.00 mIU/ml.
- Prepuberty Female: <00.20 mIU/ml.
Adult Female:
- Follicular Phase: 02.00 – 15.00 mIU/ml.
- Mideycle peak: 22.00 – 105.00 mIU/ml.
- Luteal phase: 00.60 – 19.00 mIU/ml.
- Postmenopausal: 16.00 – 64.0 mIU/ml.
Report unit : mIU/ml.
এখানে Prepuberty মানে হচ্ছে বয়ঃসন্ধিকাল এর নরমাল লেভেল।
অন্যান্য যেই নরমাল লেভেল আছে সেইগুলি মেয়েদের বিভিন্ন ফেস এর অবস্থা বা লক্ষণ অনুযায়ী নরমাল কি এবনরমাল বুঝা যায়। তাই সেই লক্ষণ গুলি না জেনে বা জটিল হবার কারণে ডাক্তার এর পরামর্শ নেয়া উচিৎ।
আমাদের পোষ্ট টি ধারণা পাবার জন্যে এখানে অনেক বিষয় বা উপসর্গ উপরে নির্ভর করে নরমাল লেভেল বিবেচনা করা হয় তাই সেই দিকে অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে।
আলোচ্য বিষয়বলি
অধিক LH এর কিছু লক্ষণ:
উচ্চ Lh মাত্রার সাথে যুক্ত কিছু সংক্ষিপ্ত লক্ষণ ও উপসর্গ নিম্নে দেয়া হল:
- মহিলাদের অনিয়মিত মাসিক চক্র।
- ডিম্বস্ফোটন সমস্যা এবং গর্ভধারণে সমস্যা সৃষ্টি।
- পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (PCOS) লক্ষণ যেমন ডিম্বাশয়ের সিস্ট, ওজন বৃদ্ধি এবং উর্বরতা সমস্যা।
- Premature ovarian failure (POF) লক্ষণ যেমন রাতে ঘামা এবং উর্বরতা কমে যাওয়া।
- হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে সম্ভাব্য পিটুইটারি গ্রন্থির রোগ তৈরি হওয়া।
Lh বেড়ে যাবার কিছু কারণ:
এখানে কিছু সাধারণ কারণ রয়েছে কেন LH মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে:
- ডিম্বস্ফোটন: মহিলাদের Lh সার্জ ডিম্বস্ফোটন শুরু করে। Lh-এর বৃদ্ধি মাসিক চক্রের মাঝামাঝি সময়ে ঘটে এবং ডিম্বাশয় থেকে একটি পরিপক্ক ডিম্বাণু বের হয় । তাই Lh-এর বৃদ্ধি মাসিক চক্রের একটি স্বাভাবিক অংশ।
- পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS): PCOS মহিলাদের মধ্যে একটি সাধারণ হরমোনজনিত রোগ। এটি LH এর অধিক ফলাফল সহ হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। PCOS-এ, অধিক LH মাত্রা স্বাভাবিক মাসিক চক্রকে বাঁধা সৃষ্টি করে এবং অনিয়মিত পিরিয়ড, ডিম্বাশয়ের সিস্ট এবং গর্ভধারণে অসুবিধার মতো সমস্যায় তৈরি করতে পারে।
- প্রাথমিক ডিম্বাশয় বাঁধা তৈরি: প্রাথমিক ডিম্বাশয় ব্যর্থতা এমন একটি পর্যায় যেখানে ডিম্বাশয় 40 বছর বয়সের আগেই কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এটি সঠিক হরমোন নিয়ন্ত্রণের অভাবের কারণে Lh-এর মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে।
- মেনোপজ: মেনোপজ, যা সাধারণত 45-55 বছর বয়সী মহিলাদের মধ্যে ঘটে, তখন LH মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি হতে পারে।ডিম্বাশয়গুলি ধীরে ধীরে তাদের প্রজনন কার্য বন্ধ করে দেয়। যার ফলে Lh-এর এই বৃদ্ধি ইস্ট্রোজেন তৈরি করতে ডিম্বাশয়কে উদ্দীপিত করার জন্য দায়ী।
- টেস্টিকুলার ডিসঅর্ডার: পুরুষদের মধ্যে, টেস্টিকুলার ডিজঅর্ডারের কারণে LH মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে যা টেস্টোস্টেরন তৈরিতে প্রভাব ।
এখন আমরা Lh কমানোর উপায় জেনে নিব।
আরও পড়ুনঃ Fsh test নরমাল কত? FSH হরমোন বেড়ে গেলে কি হয়? FSH কমে গেলে কি হয়? Fsh কমানোর উপায় কি?
Lh কমানোর উপায়:
এখানে কিছু সাধারণ পদ্ধতি রয়েছে যা LH মাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে:
1. চিকিৎসা : যদি বিভিন্ন রোগ, যেমন পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (PCOS) বা পিটুইটারি গ্রন্থি ব্যাধি, উচ্চ LH মাত্রার কারণ হয়ে থাকে।তাহলে আপনার ডাক্তার হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে এবং LH উৎপাদন কমাতে চিকিৎসা ব্যাবস্থা নিতে পারেন।
2. লাইফস্টাইল পরিবর্তন: কিছু লাইফস্টাইল পরিবর্তন Lh লেভেল কমাতে সাহায্য করতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে:
- স্বাস্থ্যকর খাদ্য: একটি সুষম খাদ্য অনুসরণ করতে হবে যাতে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে। ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য , পরিশোধিত শর্করা। স্যাচুরেটেড ফ্যাট কমানোর কথা বিবেচনা করুন।
- ওজন ব্যবস্থাপনা: স্বাস্থ্যকর ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখলে , বিশেষ করে PCOS-এর ক্ষেত্রে, হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। আপনার ওজন যদি বেশি হয়, অতিরিক্ত ওজন কমালে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ঠিক হবে এবং LH মাত্রা কমাতে পারে।
- স্ট্রেস হ্রাস: উচ্চ মাত্রার চাপ হরমোন উৎপাদনে বাঁধা তৈরি করতে পারে। ধ্যান, যোগব্যায়াম, গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম স্ট্রেস-কমানোর সহায়ক হতে পারে।
- নিয়মিত ব্যায়াম: নিয়মিত শারীরিক ক্রিয়াকলাপ হরমোনের ভারসাম্যকে ঠিক করতে পারে। সপ্তাহের বেশিরভাগ দিন, দিনে কমপক্ষে 30 মিনিটের জন্য ব্যায়াম করুন।
3. ওষুধ এবং থেরাপি: শরীর এর উপসর্গ বিবেচনা করে, আপনার ডাক্তার দ্বারা উচ্চ lh মাত্রা মোকাবেলার জন্য নির্দিষ্ট ওষুধ বা থেরাপির নেয়া যেতে পারে।
4. হরমোনাল গর্ভনিরোধ: কিছু ক্ষেত্রে, হরমোন সংক্রান্ত গর্ভনিরোধ পদ্ধতি, যেমন জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি, LH মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে এবং হরমোনের ভারসাম্য সঠিক রাখতে সাহায্য করতে পারে।
উপসংহার:
তবে এই টেস্ট এর যাবতীয় যাই ফলাফল আসুক না কেন আপনার অবশ্যই ডাক্তার এর পরামর্শ নেয়া উচিৎ। ডাক্তার আপনার শারীরিক অবস্থা ও উপসর্গ বিবেচনা করে এই টেস্ট দিবে এবং তিনি আপনার লক্ষণ অনুযায়ী নরমাল নাকি এবনরমাল সেটি বিবেচনা করবেন ।
আমরা শুধু জানার বা শিক্ষার জন্যে পোস্ট টি করলাম।
আপনারা যদি Lh test কেন করা হয় সেই বিষয় এ জানতে চান তাহলে আগের পোষ্ট টি পরে নিতে পারবেন।
আমাদের পোস্ট যদি ভালো লাগে এবং করো উপকার এ এসে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের পোস্ট শেয়ার করবেন ।
আর নতুন টেস্ট সম্পর্কিত ধারণা পেতে অবশ্যই আমাদের oviggobd পেজটিতে লাইক দিবেন ধন্যবাদ।
নতুন কিছু শিখতে চাই এবং সেখাতে চাই । অনভিজ্ঞও থেকে আপনিও হয়ে উঠুন অভিজ্ঞ।
Lh hormone যাদের নরমাল রেঞ্জের চেয়ে কম তাদের কি বাচ্চা কনসিভ হয় না?
আপনি এই বিষয় এ গাইনী ডাক্তার এর পরামর্শ নিন ধন্যবাদ।