Fsh test নরমাল কত? FSH হরমোন বেড়ে গেলে কি হয়? FSH কমে গেলে কি হয়? Fsh কমানোর উপায় কি?

গত পোস্ট এ আমরা fsh test কেন করা হয় সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। আজকে আমরা fsh টেস্ট এর নরমাল রেঞ্জ,বেড়ে বা কমে গেলে কি হতে পারে। Fsh কমানোর উপায় কি কি সেই বিষয় এ আলোচনা করবো।
আপনি আগের পোষ্ট টি পরে নিতে চাইলে নিচে লিঙ্ক থাকবে অথবা ক্যাটগরি লিস্ট থেকে দেখে নিতে পারবেন।

Fsh test নরমাল কত?

Fsh টেস্ট এর নরমাল বিবেচনা করা সাধারণ মানুষ দের জন্যে একটু জটিল হতে পারে। তবে শুধু জেনে রাখার জন্যে আমরা fsh টেস্ট এর নরমাল লেভেল টি উল্লেখ করতে যাচ্ছি। মেশিন এবং ডায়াগনস্টিক ভেদে ইউনিট এর উপরে নির্ভর করে নরমাল লেভেল এর পরিবর্তন হতে পারে তবে আমরা স্ট্যান্ডার্ড একটি নরমাল লেভেল দিচ্ছি।

fsh test report
fsh test report

 

Fsh test নরমাল লেভেল :

  • Prepuberty Male : <02.00 mIU/ml
  • Adult Male: 01.00 – 08.00 mIU/ml
  • Prepuberty Female: <02.00 mIU/ml
  • Adult Female :
  • Follicular phase: 04.00 – 13.00 mIU/ml
  • Midcycle peak: 05.00 – 22.00 mIU/ml
  • Luteal phase: 02.00- 13.00 mIU/ml
  • Postmenopausal: 20.00- 138.00 mIU/ml

Reporting unit : mIU/ml.

এখানে Prepuberty মানে হচ্ছে বয়ঃসন্ধিকাল এর নরমাল রেঞ্জ।

Adult হচ্ছে প্রাপ্ত বয়স্ক।
এছড়াও অন্যান্য যেই নরমাল লেভেল আছে সেইগুলি মেয়েদের বিভিন্ন সময় এর অবস্থা বা লক্ষণ অনুযায়ী বিবেচনা করা হয়। তাই সেই লক্ষণ গুলি না জেনে বা জটিল হবার কারণে ডাক্তার এর পরামর্শ নেয়া উচিৎ।

আমাদের পোষ্ট টি ধারণা পাবার জন্যে এখানে অনেক বিষয় বা উপসর্গ উপরে নির্ভর করে নরমাল লেভেল বিবেচনা করা হয় তাই সেই দিকে অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে।

FSH হরমোন বেড়ে গেলে কি হয়?

Fsh বেড়ে যাবার লক্ষণ সমূহ:

fsh test sample tube

 

  1. অনিয়মিত মাসিক চক্র।
  2. রাতে ঘামা।
  3. গর্ভধারণে অসুবিধা বা বন্ধ্যাত্ব।
  4. সেক্স ড্রাইভ কমে যাওয়া।
  5. মেজাজের পরিবর্তন এবং বিরক্তি।

শরীরে Fsh মাত্রা বেড়ে যাবার বিভিন্ন কারণ রয়েছে:

  1. মেনোপজ: মহিলাদের মধ্যে, যখন তারা মেনোপজের পর্যায আসে, ডিম্বাশয় কম প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে ওঠে, যার ফলে FSH মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এর কারণ হল ডিম্বাশয় কম হরমোন এবং ডিম উৎপাদন করছে এবং শরীর ক্ষতিপূরণ করতে FSH উৎপাদন বাড়ায় ।
  2. Primary Ovarian Insufficiency (POI): premature ovarian failure নামেও পরিচিত । ডিম্বাশয় 40 বছর বয়সের আগে কাজ করা বন্ধ করে দেয় যখন POI ঘটে । এই অবস্থার কারণে FSH মাত্রা বেড়ে যায় কারণ ডিম্বাশয় আর পর্যাপ্ত ইস্ট্রোজেন তৈরি করে না ।
  3. পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS): PCOS হল একটি হরমোনজনিত ব্যাধি যা প্রজনন বয়েসের মহিলাদের প্রভাবিত করে৷ এটি ডিম্বাশয়ে একাধিক ছোট সিস্ট এবং হরমোনের ভারসাম্যহীনতার উপস্থিতি PCOS এর লক্ষণ। PCOS যেসকল মহিলাদের আছে তাদের স্বাভাবিক হরমোন নিয়ন্ত্রণে ব্যাঘাতের কারণে প্রায়ই স্বাভাবিক FSH মাত্রার চেয়ে বেশি থাকে।
  4. টার্নার সিনড্রোম: টার্নার সিন্ড্রোম হল একটি জেনেটিক ব্যাধি যা মহিলাদের হয়ে থাকে, যার কারণে X ক্রোমোজোমের একটি আংশিক বা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত থাকে। টার্নার সিন্ড্রোমে আক্রান্ত মহিলাদের ক্ষেত্রে অধিক মাত্রায় FSH থাকে কারণ তাদের ডিম্বাশয় FSH উদ্দীপনায় সঠিকভাবে সাড়া দেয় না।
  5. টেস্টিকুলার ডিসঅর্ডার: পুরুষদের মধ্যে কিছু টেস্টিকুলার ডিসঅর্ডার, যেমন ক্লাইনফেল্টার সিন্ড্রোম, কারণে অধিক FSH মাত্রা হতে পারে। এই অবস্থাগুলি শুক্রাণুর উৎপাদনকে কমে ফেলতে পারে এবং টেস্টিস এবং পিটুইটারি গ্রন্থির মধ্যে স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া ব্যাহত করে, যার ফলে FSH উৎপাদন বেড়ে যায়।

আরও পড়ুনঃ psa test নরমাল রেঞ্জ কত? psa বেড়ে গেলে কি হয়? প্রোস্টেট ক্যান্সার এর লক্ষণ কি?

FSH কমে গেলে কি হয়?

ফলিকল-স্টিমুলেটিং হরমোন (FSH) এর মাত্রা বিভিন্ন কারণে কমতে পারে। শরীরে FSH মাত্রা কমে যাওয়ার কিছু সম্ভাব্য কারণ নিম্নে দেয়া হল:

  1. হাইপোথ্যালামিক বা পিটুইটারি কর্মহীনতা: হাইপোথ্যালামাস এবং পিটুইটারি গ্রন্থি দ্বারা FSH উৎপাদন নিয়ন্ত্রিত হয়। যদি এই স্থানে কর্মহীনতা বা ক্ষতি হয়, তার জন্য FSH নিঃসরণ কম হতে পারে। হাইপোথ্যালামিক বা পিটুইটারি টিউমার, মস্তিষ্কে রেডিয়েশন থেরাপি বা নির্দিষ্ট ওষুধের কারণে এটি ঘটতে পারে।
  2. হাইপোগোনাডিজম: হাইপোগোনাডিজম বলতে এমন একটি অবস্থাকে বোঝায় যেখানে গোনাডগুলি (মেয়ে দের ডিম্বাশয়, ছেলেদের অণ্ডকোষ) পর্যাপ্ত পরিমাণ হরমোন তৈরি করতে পারে না। এই ক্ষেত্রে, যৌন হরমোনের কমে যেতে থাকে যার কারণে (মহিলাদের মধ্যে ইস্ট্রোজেন, পুরুষদের মধ্যে টেস্টোস্টেরন) FSH উত্পাদন কম করতে পারে। হাইপোগোনাডিজম জন্মগত হতে পারে এবং জেনেটিক ডিসঅর্ডার, অটোইমিউন ডিসঅর্ডার, সংক্রমণ বা গোনাডের ট্রমা হতে পারে।
  3. স্ট্রেস বা দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা: দীর্ঘ দিনের শারীরিক বা মানসিক চাপ এবং দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা দেহের স্বাভাবিক হরমোনের ভারসাম্যকে ব্যাহত করতে পারে। এই বাঁধা FSH এর উৎপাদন ও নিয়ন্ত্রণকে প্রভাবিত করে থাকে , যার ফলে এর মাত্রা কমে যায়। স্ট্রেস-সম্পর্কিত অবস্থা যেমন অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা বা অধিক ব্যায়ামও কম FSH মাত্রায় অবদান রাখতে পারে।
  4. পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS): যদিও PCOS কিছু ক্ষেত্রে অধিক FSH মাত্রার কারণ হতে পারে, এটি অন্যদের ক্ষেত্রে FSH লেভেল কমিয়ে দিতে পারে।হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দ্বারা PCOS চিহ্নিত করা হয়, এবং কিছু ব্যক্তির মধ্যে, হরমোন নিয়ন্ত্রণে ব্যাহত হওয়ার ফলে FSH উৎপাদন কম হতে পারে।
  5. বার্ধক্য: রোগীর বয়স বেশি হলে , FSH মাত্রা স্বাভাবিকভাবেই কমে যায়। যখন ডিম্বাশয় FSH-এর প্রতি কম প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে ওঠে তখন মহিলাদের ক্ষেত্রে, পেরিমেনোপজ এবং মেনোপজের সময় এই পতন ঘটে । পুরুষদের মধ্যে, FSH মাত্রা বয়সের সাথে ধীরে ধীরে কমে যায়, তবে কমার হার মহিলাদের তুলনায় সাধারণত কম উল্লেখযোগ্য।

Fsh কমানোর উপায় কি?

এখানে কিছু সাধারণ উপায় দেয়া হল যা FSH মাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে:

  1. হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি: কিছু ক্ষেত্রে, হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি (HRT) হরমোনের ভারসাম্য রাখতে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই পদ্ধতিটি সাধারণত যাদের মেনোপজ বা premature ovarian failure হয় সেই মহিলাদের মধ্যে করা হয়। ইস্ট্রোজেন থেরাপি শরীরকে প্রয়োজনীয় হরমোন সরবরাহ করে FSH উৎপাদন কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করতে পারে।
  2. ওষুধ: কিছু ক্ষেত্রে, অধিক FSH মাত্রার সাথে সম্পর্কিত অবস্থার জন্য ওষুধ নির্ধারিত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমে (PCOS), গর্ভনিরোধক বা অ্যান্টি-অ্যান্ড্রোজেন ওষুধের মতো ওষুধগুলি হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে এবং FSH কমাতে ব্যবহার করা যেতে পারে।তবে সেটি অবশ্যই ডাক্তার পরামর্শ অনুযায়ী নিতে হবে।
  3. জীবনধারা পরিবর্তন: একটি সুস্বাস্থ্যকর জীবনধারা গ্রহণ হরমোনের ভারসাম্যের উপর ভাল প্রভাব ফেলতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে সুষম খাদ্য তালিকায় রাখা, নিয়মিত ব্যায়াম করা, অতিরিক্ত চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করা এবং পর্যাপ্ত ঘুমানো। যদিও জীবনযাত্রার পরিবর্তনগুলি সরাসরি FSH কমাতে কোন ভূমিকা রাখে না, তবে তারা সামগ্রিক হরমোন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
  4. অন্তর্নিহিত অবস্থার চিকিত্সা: যদি অধিক fsh অন্তর্নিহিত সমস্যার কারণে হয় যেমন পিটুইটারি বা হাইপোথ্যালামিক ডিসঅর্ডার, তাহলে অন্তর্নিহিত সমস্যার চিকিৎসা করে FSH মাত্রা কমাতে হবে । এটি নির্দিষ্ট অবস্থার উপর নির্ভর করে যেমন অপারেশন, থেরাপি বা ওষুধ ডাক্তার পরামর্শ অনুযায়ী নিতে হবে।
  5. ভালো ডাক্তার এর পরামর্শ: এন্ডোক্রিনোলজি (Endocrinology) বা প্রজনন স্বাস্থ্যে বিশেষজ্ঞ একজন ডাক্তার সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ। একজন ডাক্তার সঠিক রোগ নির্ণয় পদ্ধতি প্রদান করতে পারে, উচ্চ FSH এর অন্তর্নিহিত কারণ সনাক্ত করতে পারে এবং আপনার ব্যক্তিগত পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে উপযুক্ত চিকিৎসার পরামর্শ দিতে পারে।

উপসংহার:

ফলাফল যাই আসুক না কেন অবশ্যই ভালো ডাক্তার এর পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করানো উচিৎ। যেকোনো ওষুধ খাবার জন্যে অবশ্যই ডাক্তার এর পরামর্শ নিন। নিজে থেকে বা অন্য কারও কাছে শুনে ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

Fsh টেস্ট কেন করা হয় আগের পোষ্ট টি পড়বার জন্যে নিচের লিংক থেকে দেখে নিন।

fsh test কি? fsh test কেন করা হয়? খরচ কত, টেস্ট প্রস্তুতি সকল কিছু বাংলায়। | fsh test details in bengali.

 

আজকের পোস্ট টি এই পর্যন্তই। আমাদের পোস্ট যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। শেয়ার করলে অন্যদের উপকার হবে।
আর নতুন টেস্ট এর আপডেট পেতে অবশ্যই আমাদের পেজ oviggobd তে লাইক দিবেন ধন্যবাদ।

পুরুষের শরীরে fsh এর কাজ কি

পুরুষদের মধ্যে, এটি টেস্টিকুলার ফাংশন এবং শুক্রাণু উৎপাদন নির্ণয় করতে সহায়তা করতে পারে।

পুরুষদের উচ্চ এফএসএইচ কারণ

পুরুষদের মধ্যে কিছু টেস্টিকুলার ডিসঅর্ডার, যেমন ক্লাইনফেল্টার সিন্ড্রোম, কারণে অধিক FSH মাত্রা হতে পারে।

৬ thoughts on “Fsh test নরমাল কত? FSH হরমোন বেড়ে গেলে কি হয়? FSH কমে গেলে কি হয়? Fsh কমানোর উপায় কি?”

Leave a Comment