electrolytes test কি এবং কেন করা হয়? নরমাল কত, খরচ কত?electrolytes test all details in bangla.

আজকে আমরা electrolytes test বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। electrolytes test সম্পর্কে যা জানা দরকার সেই সকল বিষয় নিয়ে। electrolytes test কি এবং কেন করা হয়? electrolytes বেড়ে যায় কেন? electrolytes test এর দাম কত ডায়াগনস্টিক সেন্টার এ।

electrolytes test কি?

electrolytes test হল একটি রক্ত ​​পরীক্ষা যা রোগীর শরীরে electrolytes এর মাত্রা বা ইলেক্ট্রোলাইটের অসামঞ্জস্যতা পরিমাপ করে। electrolytes হল খনিজ পদার্থ যা স্নায়ু এবং পেশী ফাংশন, সঠিক তরল ভারসাম্য বজায় রাখে এবং রোগীর রক্তের pH নিয়ন্ত্রণ সহ বিভিন্ন শারীরিক কার্যকলাপ এ গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

electrolytes test এর মধ্যে যা যা রয়েছে:

1. সোডিয়াম -Sodium (Na+) :

সোডিয়াম তরল ভারসাম্য, স্নায়ুর কার্যকারিতা এবং পেশী সংকোচন বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সোডিয়াম নরমাল লেভেল:

electrolytes test tube
electrolytes test tube

Sodium (Na+) 136.00 – 148.00 mmol/L.

2. পটাসিয়াম – Potassium (K+):

পটাসিয়াম স্নায়ু ,পেশী ফাংশন, হৃৎপিণ্ডের পেশী কার্যকলাপ এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ।

পটাসিয়াম নরমাল লেভেল:

Potassium (K+) 3.80 – 5.20 mmol/L.

3. ক্লোরাইড – Chloride (Cl-):

ক্লোরাইড শরীরের তরল ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং প্রায়শই সোডিয়ামের সাথে পরিমাপ করা হয়।

ক্লোরাইড নরমাল লেভেল:

Chloride (Cl-) 95.00 – 107.00 mmol/L.

4. কার্বন – ডাই – অক্সাইড-Total carbondioxide (CO2):

শরীরে মোট CO2 এর কাজ অ্যাসিড-বেস ভারসাম্য বজায় রাখার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত, বিশেষ করে রক্তের pH নিয়ন্ত্রণ।

কার্বন – ডাই – অক্সাইড নরমাল লেভেল:

Total carbondioxide (CO2) 24.00 – 30.00 mmol/L.

5. বাইকার্বোনেট – Bicarbonate (HCO3-):

বাইকার্বোনেট রোগীর রক্তের pH ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে করে।

বাইকার্বোনেট নরমাল লেভেল:

Bicarbonate (HCO3-) 22.00 – 28.00 mmol/L.

বিষয় বস্তু সংক্ষেপে

Serum electrolytes test কেন করা হয়:

ইলেক্ট্রোলাইট পরীক্ষা কেন করা হয় তার সাধারণ কারণগুলো নিম্নে দেয়া হল:

  1. সাধারণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা: সামগ্রিক স্বাস্থ্যের অবস্থা জানতে এবং কোনও সম্ভাব্য ভারসাম্যহীনতা বা অস্বাভাবিকতা সনাক্ত করতে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার অংশ হিসাবে ইলেক্ট্রোলাইট পরীক্ষা করা যেতে পারে।
  2. ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতার লক্ষণ: ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতার লক্ষণগুলি যদি আপনার শরীরে পাওয়া যায়, যেমন পেশী দুর্বলতা, ক্লান্তি, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, বিভ্রান্তি, বমি বমি ভাব, বা রক্তচাপের পরিবর্তন, ইত্যাদি তাহলে অন্তর্নিহিত কারণ সনাক্ত এবং মোকাবেলা করতে ডাক্তার ইলেক্ট্রোলাইট পরীক্ষার দিতে পারেন।
  3. ডিহাইড্রেশন: যখন আপনার শরীরে যতটা পানি গ্রহণ করা দরকার তার চেয়ে বেশি বের হয়ে যায় তখন electrolytes স্তরগুলি ডিহাইড্রেশন এর কারণে উল্লেখযোগ্যভাবে কম বেশি হতে পারে । ইলেক্ট্রোলাইট ডিহাইড্রেশনের অবস্থা মূল্যায়ন করতে সাহায্য করে এবং উপযুক্ত চিকিত্সা নির্ধারণে সহায়তা করে।
  4. কিডনির কার্যকারিতা সনাক্তকরণ: কিডনি রোগের কারণে শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য পরিবর্তন হতে পারে। যেকোন অস্বাভাবিক ফলাফল সনাক্ত করার জন্য আরও চিকিত্সার প্রয়োজন হতে পারে।
  5. ওষুধ বা চিকিৎসার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা: কিছু ওষুধ, যেমন মূত্রবর্ধক, ইলেক্ট্রোলাইটের লেভেলকে পরিবর্তন করতে পারে। কিডনি রোগ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, এবং হরমোনজনিত ব্যাধির মতো চিকিৎসা পরিস্থিতি ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতার জন্য দায়ী হতে পারে। নিয়মিত ইলেক্ট্রোলাইট পরীক্ষা এই সমস্যা নিরীক্ষণ করতে এবং প্রয়োজনে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করে।
  6. অপারেটিভ বা পোস্টোপারেটিভ মূল্যায়ন: অপারেশন করার আগে রোগীর ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য এবং স্বাস্থ্যের অবস্থা জানার জন্য ইলেক্ট্রোলাইট পরীক্ষা করা যেতে পারে। এই ফলাফল অ্যানেস্থেশিয়া এবং অস্ত্রোপচার ব্যবস্থাপনা করতে সাহায্য করে। একইভাবে অস্ত্রোপচারের পরে, সঠিক ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য নিশ্চিত করার জন্য ইলেক্ট্রোলাইট লেভেল পর্যবেক্ষণ করা যেতে পারে।
  7. দীর্ঘস্থায়ী অবস্থার ব্যবস্থাপনা: উচ্চ রক্তচাপ, হৃদযন্ত্রের সমস্যা, ডায়াবেটিস বা লিভারের রোগের মতো দীর্ঘস্থায়ী অবস্থার ব্যক্তিদের জন্য, চিকিত্সার কার্যকারিতা যাচাই করতে এবং সম্ভাব্য জটিলতাগুলি সনাক্ত করতে ইলেক্ট্রোলাইট লেভেল এর নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হয়।

আরও পড়ুনঃ creatinine test কি এবং কেন করা হয়?- serum creatinine test price in bangladesh 2023.

electrolyte test এর দাম কত – electrolyte test price in bangladesh :

electrolyte test বহুল পরিচিত একটি পরীক্ষা। এটা সাধারণত সকলস্তর এর ল্যাব বা হসপিটাল এ কম বেশি হয়ে থাকে। অঞ্চল ভেদে টেস্ট এর দাম কম বেশি হয়ে থাকে।
আমরা কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বর্তমান দাম দিচ্ছি:

পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের electrolyte test এর দাম ১০০০ টাকা ২০২৩ এর দাম।

National Heart Foundation of Bangladesh electrolytes test price :

নেশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অফ বাংলাদেশ electrolytes test এর দাম ৭০০ টাকা।

সরকারি ভাবে electrolytes test এর দাম ২৫০ টাকা মাত্র।

electrolytes test করতে কি স্যাম্পল লাগে:

electrolytes test করতে red tube অথবা গ্রীন টিউব(heparin) এ করা হয়।
electrolytes test করতে সিরাম (serum) লাগে।

electrolytes test এর সতর্কতা:

তবে একটি বিষয় জানা দরকার এই electrolytes test করতে অবশ্যই কম সময় এর মধ্যে করা উচিৎ তা না হলে ব্লাড এ পটাসিয়াম লেভেল বাড়তে থাকে।

তাই ব্লাড কালেকশন করার পরে অতি শীগ্রই টেস্ট করে ফেলা উচিৎ।

আবার অনেক সময় দেখা যায় বয়স্ক অথবা ছোট বাচ্চা শিশুদের রক্ত সংগ্রহ করার সময় তাদের রক্ত আসতে বা বের হতে চাই না। তখন অনেক কেই হাত এর সামনে চাপ দিতে বা ছোট বাচ্চা দের হাত জোড় জোরে চিপে ব্লাড নেবার চেষ্টা করে যা একদমই ঠিক নয়।

তাতে রক্ত হেমোলাইসিস (hemolysis) হয়ে যায় এবং electrolytes test এর ফলাফল ভালো আসে না। তখন ল্যাব বা ডায়াগনস্টিক থাকে পুনরায় ব্লাড নিতে বলা হয়। তাই রক্ত নেবার সময় অবশ্যই এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখা দরকার।

আরও পড়ুনঃ lipid profile test কি এবং কেন করা হয়? দাম কত ,নরমাল কত?- lipid profile test price in bangladesh.

electrolytes test এর রিপোর্ট ডেলিভারি সময়:

electrolytes test করতে একটি অটো অ্যানালাইজার এ খুবই কম সময় লাগে।

আমরা যদি vitros 350 ,Vitor 5600 , Backman coulter au 480 ,dimension rxl max,cobas 501 এ করে থাকি এই টেস্ট মেশিন টাইম ২-৪ মিনিট লাগে তবে বাইকার্বনেট,টোটাল কার্বনেট ১১ মিনিট এর মত সময় লাগে ।
electrolytes test রোগীর অবস্থা খারাপ হলে অনেক সময় আর্জেন্ট রিপোর্ট লাগে তাই সেটি ১ ঘণ্টার মধ্যেই অনেক ডায়াগনস্টিক সেন্টার রিপোর্ট দিয়ে থাকে।

  • তবে স্ট্যান্ডার্ড electrolytes test রিপোর্ট ডেলিভারি এর আর্জেন্ট সময় ২ ঘণ্টা ।
  • নরমাল electrolytes test এর রিপোর্ট ডেলিভারি সময় ৮-১০ ঘণ্টা।

তবে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ক্যাপাসিটি এর উপরে নির্ভর করে টেস্ট এর রিপোর্ট ডেলিভারি সময় কম বেশি হতে পারে।

electrolytes test এর রিপোর্ট সম্পর্কে ধারণা:

electrolytes শরীরে বিভিন্ন কারণে ফলাফল এর ভিন্নতা দেখা দেয় । তাই সকল কারণ আমাদের দেয়া সম্ভব না। আমরা শুধু ২ টি করে electrolytes কেন বাড়ে বা কমে সেই সম্পর্কে ধারণা দিচ্ছি।

electrolytes test report

electrolytes test রিপোর্ট নিয়ে অবশ্যই ভালো ডাক্তার এর পরামর্শ ব্যতীত ,নিজে কোন পদক্ষেপ নিবেন না।
কারণ গুলো নিম্নে দেয়া হল:

সোডিয়াম -Sodium (Na+) কেন বাড়ে :

  1. বেশি সোডিয়াম গ্রহণ: রক্তে সোডিয়াম (Na+) এর পরিমাণ বৃদ্ধির প্রাথমিক কারণগুলির মধ্যে একটি হল উচ্চ সোডিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়া।
  2. কিডনির কর্মহীনতা: রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আরেকটি কারণ হল কিডনির কার্যকারিতা।

সোডিয়াম -Sodium (Na+) কেন কমে:

  1. হাইপোনাট্রেমিয়া: হাইপোনাট্রেমিয়া বলতে রক্তে কম সোডিয়াম (Na+) মাত্রা বোঝায়।
  2. হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, যেমন অ্যালডোস্টেরনের নিম্ন মান, সোডিয়াম নিয়ন্ত্রণে ত্রুটি তৈরি করে এবং সোডিয়াম এর মাত্রা কমিয়ে ফেলে।

পটাসিয়াম – Potassium (K+) কেন বাড়ে:

  1. কিডনির কার্যকারিতা: রক্তে পটাসিয়াম (K+) লেভেল বেড়ে যাওয়ার একটি সাধারণ কারণ হল কিডনির কার্যকারিতা। পটাশিয়াম সহ ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে কিডনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  2. ওষুধ : কিছু ওষুধ পটাসিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।

পটাসিয়াম – Potassium (K+) কেন কমে:

  1. মূত্রবর্ধক ব্যবহার: মূত্রবর্ধক হল ওষুধ যা প্রস্রাবের উৎপাদন বৃদ্ধি করে এবং রক্তে পটাসিয়াম (K+) মাত্রা কমিয়ে ফেলে।
  2. গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ডিসঅর্ডার: কিছু গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ব্যাধির ফলে পটাসিয়ামের মাত্রা কমে যেতে পারে।

ক্লোরাইড – Chloride (Cl-) কেন বাড়ে:

  1. ডিহাইড্রেশন: ডিহাইড্রেশন এর কারণে রক্তে ক্লোরাইড (Cl-) মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।
  2. কিডনির কর্মহীনতা: কিডনির কাজ না করার কারণে রক্তে ক্লোরাইডের মাত্রা বেড়ে যায় ।

ক্লোরাইড – Chloride (Cl-) কেন কমে:

  1. অত্যধিক ঘাম: প্রচুর ঘাম, বিশেষ করে অতিরিক্ত শারীরিক কাজ কর্মের কারণে বা গরম আবহাওয়ায়, রক্তে ক্লোরাইড (Cl-) মাত্রা হ্রাস করতে পারে।
  2. ওষুধ: কিছু ওষুধ রক্তে ক্লোরাইডের মাত্রা হ্রাস করতে পারে।

বাইকার্বোনেট – Bicarbonate (HCO3-) কেন বাড়ে:

  1. মেটাবলিক অ্যালকালোসিস: মেটাবলিক অ্যালকালোসিস হল এমন একটি অবস্থা যা রক্তে বাইকার্বোনেট (HCO3-) মাত্রা বৃদ্ধি পেলে বোঝা যায়।
  2. শ্বাসযন্ত্রের ব্যাধি: কিছু শ্বাসযন্ত্রের রোগ বাইকার্বোনেটের মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে।

বাইকার্বোনেট – Bicarbonate (HCO3-) কেন কমে:

  1. মেটাবলিক অ্যাসিডোসিস: মেটাবলিক অ্যাসিডোসিস হল এমন একটি অবস্থা যা রক্তে বাইকার্বোনেট (HCO3-) মাত্রা কমে গেলে সনাক্ত করা যায়।
  2. কিডনির কার্যকারিতা: কিডনি শরীরে বাইকার্বোনেটের ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আজকে এই পর্যন্তই আমদের পোস্ট ভালো লাগল অবশ্যই আমদের ফেসবুক পেজ oviggobd ফলো করবেন ধন্যবাদ।

২ thoughts on “electrolytes test কি এবং কেন করা হয়? নরমাল কত, খরচ কত?electrolytes test all details in bangla.”

    • শুনে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ মন্তব্য করবার জন্য।আপনার আমাদের পোস্ট ভালো লাগলে বা কিছু শিখতে পারলে অন্যদের মাঝেও share করতে পারেন।

      Reply

Leave a Comment