d-dimer test কি এবং কেন করা হয় ?d-dimer test এর সকল কিছু জেনে নিন ।খরচ কত, স্যাম্পল কালেকশন, প্রিপারেশন, ডেলিভারি সময় কত?

আজকে আমরা আলোচনা করবো d-dimer test নিয়ে । d-dimer test কেন করা হয় ,এর স্যাম্পল কালেকশন কোন টিউব এ করা হয়। বাংলাদেশ এ এই টেস্ট এর দাম কত। কোন মেশিনে করা হয়? ডেলিভারি সময় কত,টেস্ট প্রিপারেশন কি? সকল বিষয় থাকবে আজকের পোস্ট এ।

d-dimer test কি?

d-dimer test হল একটি রক্ত ​​পরীক্ষা যা শরীরে ডি-ডাইমার নামক পদার্থের মাত্রা নির্ণয় করে। ডি-ডাইমার হল একটি প্রোটিন খণ্ড যা রক্তের জমাট দ্রবীভূত হলে উৎপাদিত হয়। পরীক্ষাটি প্রাথমিকভাবে রক্ত ​​জমাট বাঁধা বা থ্রম্বোসিস (thrombosis) সম্পর্কিত অবস্থা নির্ণয় বা বের করতে সাহায্য করে।

d-dimer test কেন করা হয় ?

 

d-dimer test sample tube
d-dimer test sample tube

 

  1. ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস (DVT): যদি কোনও রোগীর পায়ে বা বাহুতে ব্যথা, ফোলা বা লাল হওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয় যা DVT-এর ইঙ্গিত হতে পারে, তাহলে ডি-ডাইমার পরীক্ষা ডাক্তার দিতে পারে। ডি-ডাইমারের উচ্চ ফলাফল একটি সক্রিয় রক্ত ​​​​জমাট বাঁধার উপস্থিতির আভাস দিতে পারে।
  2. পালমোনারি এম্বোলিজম (PE): বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, বা কাশির মতো রক্তের লক্ষণগুলি সম্ভাব্য পালমোনারি এম্বোলিজম এর আশংকা বাড়াতে পারে। তাই d-dimer test প্রাথমিক চিকিৎসাতে কার্যকর হতে পারে, কারণ উচ্চ ফলাফল ফুসফুসে রক্ত ​​​​জমাট বাঁধার ইঙ্গিত দিতে পারে।
  3. থ্রম্বোটিক ডিসঅর্ডারগুলি নির্ণয়ে : ডি-ডাইমার টেস্টিং থ্রোম্বোটিক ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত রোগীদের বারবার রক্ত ​​​​জমাট বাঁধার ঝুঁকি মূল্যায়ন করতে বা অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট থেরাপির কার্যকারিতা নির্ণয় করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
  4. পোস্টঅপারেটিভ মনিটরিং: কিছু অপারেশন এর পরে, বিশেষ করে যাদের রক্ত ​​জমাট বাঁধার ঝুঁকি বেশি থাকে। ডাক্তাররা পোস্টোপারেটিভ থ্রম্বোসিসের কোনো লক্ষণ পরীক্ষা করার জন্য একটি ডি-ডাইমার পরীক্ষা করতে দিতে পারেন।
  5. বুকের ব্যথার চিকিৎসা: কিছু ক্ষেত্রে, যখন একজন রোগীর বুকে ব্যথা হয় এবং ডাক্তার একটি কার্ডিয়াক ইভেন্ট বা পালমোনারি এমবোলিজমের সম্ভাবনা ধারণা করেন, তখন ডায়াগনস্টিক ওয়ার্কআপের অংশ হিসাবে একটি d-dimer test করতে দিতে পারে।

আবার জানা যাক d-dimer test করতে কত খরচ হবে।

d-dimer test price in Bangladesh:

বিভিন্ন জায়গায় অঞ্চল ভেদে টেস্ট এর দাম কম বেশি হতে পারে। সব যায়গায় টেস্ট এর দাম একই হবে না । তবে হালকা পাতলা কম বেশি হবে ।তাই আপনাদের ধারণা পাবার জন্য আমরা টেস্ট এর দাম নিম্নে উল্লেখ্য করছি।

আরও পড়ুনঃ CRP test কি? CRP test কেন করা হয়? খরচ কত? CRP বেশি হলে কি হয়?

পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে d-dimer test এর দাম ১৫০০ টাকা ২০২৩ এর দাম অনুযায়ী। পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হেড অফিস এর দাম।

সরকারি হসপিটাল এ ২০২০ সাল এর দাম অনুযায়ী ৬০০ টাকা দাম d-dimer test এর।
দাম তো জানা হল এবার আমরা এই টেস্ট এর প্রিপারেশন সম্পর্কে জেনে নিব।

d-dimer test preparation:

এই টেস্টের জন্যে তেমন কোন স্পেশাল প্রস্তুতি নাই। তবে ডাক্তার কোন ওষুধ দিলে বা আগে থেকে চালু থাকলে সেই বিষয় এ কথা বলে নেয়া ভালো।

d-dimer test স্যাম্পল সংগ্রহ:

d-dimer test tube

 

এই টেস্ট টি করতে অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট (anticoagulant) দেয়া টিউব লাগবে । এই টিউব এর ভিতরে অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট হিসবে সোডিয়াম সাইট্রেট (sodium citrate) দেয়া থাকে।সোডিয়াম সাইট্রেট এর রাসায়নিক সংকেত (Na3C6H5O7)। টিউব টি হালকা নীল রঙের হয়। Sample হিসাবে প্লাজমা লাগবে টেস্ট করতে ।

d-dimer test স্যাম্পল সংগ্রহ করবার সতর্কতা:

এই টেস্ট টি খুবই সতর্কতার সাথে স্যাম্পল সংগ্রহ করতে হবে।কারণ অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট দেয়া টিউব এ স্যাম্পল সংগ্রহ করবার পরে ক্লোট করতে কিছু সময় রেখে দিতে হবে। তার পরে ১০ মিনিট সেন্ট্রিফিউজ দিতে হবে । সেন্ট্রিফিউজ দেবার পরে ৩০ মিনিট এর মধ্যেই টেস্ট করে ফেলতে হবে ।

দেরি করে টেস্ট করলে রেজাল্ট পরিবর্তন হতে পারে। এই জন্যে যেই ল্যাব নিজেরাই এই টেস্ট করে তাদের কাছে টেস্ট করা উচিৎ। আর যদি অন্যান্য ল্যাব থাকে পরীক্ষা করিয়ে আনে সেই ক্ষেত্রে এপেনডর্ফ (eppendorf )এর মধ্যে প্লাজমা টিকে তুলে নেয়া উচিৎ ।বরফ দিয়ে স্যাম্পল বক্স এ ভালো ভাবে প্যাক করে স্যাম্পল পাঠাতে হবে।

d-dimer test রিপোর্ট ডেলিভারি সময় :

ল্যাব বা হাসপাতাল এর লোকবল বা নিয়মনীতি অনুসারে টেস্ট এর ডেলিভারি সময় দেয়া থাকে। আমরা একটি স্ট্যান্ডার্ড ডেলিভারি সময় নিয়ে আলোচনা করব।
Gp getein 1100 মেসিন এ একটি d-dimer test করতে মেশিন এর ভিতরে ৩০০ সেকেন্ড বা ৫ মিনিট এর মধ্যে ফলাফল দিয়ে দেয়। তবে ফলাফল যদি খুব কম বেশি হয় তাহলে ভালো ল্যাব গুলি আরেকবার টেস্ট করে থাকে ।

d-dimer test machine getein1100

 

তবে ভালো ফলাফল এর জন্য সময় নিয়ে টেস্ট টি পর্যবেক্ষণ করে রিপোর্ট দিলে সেটি গুণগত মান ভালো হয় ।

  • আর্জেন্ট রিপোর্ট ডেলিভারি সময় ২-৩ ঘণ্টা।
  • নরমাল ডেলিভারি সময় ৭-৯ ঘণ্টা বা ১-২ দিন।

তবে এই সময় টি যেই ল্যাব নিজে এই টেস্ট করে থাকে তাদের জন্য প্রযোজ্য। অন্যান্য ল্যাব থেকে টেস্ট টি করিয়ে আনলে সময় আরো বেশি লাগতে পারে।

উপসংহার:

আমরা এই টেস্ট সম্পর্কে যেই ধারণা দিচ্ছি সেটি শিক্ষার জন্য তবে অনেক সময় বাস্তবিক কর্ম কাণ্ডে এর ব্যাতিক্রম ঘটতে পারে সেটি অবশ্যই বিবেচনাতে রাখতে হবে।
d-dimer test এর ফলাফল যাই আসুক না কেন অবশ্যই ভালো ডাক্তার দেখাতে হবে । ডাক্তার আপনার শরীর এর উপসর্গ এবং লক্ষণ বিবেচনা করে চিকিৎসা দিতে পারেন। ফলাফল নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করা ভালো নয়।

আজকের পোস্ট টি এই পর্যন্তই এর পরের পোস্ট এ আমরা d-dimer test এর নরমাল রেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করবো। সেই পোস্ট এর লিঙ্ক পোস্ট করার পরে এখানে দেখতে পারবেন।

আমাদের পোস্ট টি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের পোস্ট টি শেয়ার করতে পারেন।এতে করে অন্যান্য সবার উপকার এ আসবে।
নতুন টেস্ট সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ OviggoBd তে লাইক দিবেন ধন্যবাদ।

ডি ডাইমার পরীক্ষার উদ্দেশ্য কি?

ডি-ডাইমার হল একটি প্রোটিন খণ্ড যা রক্তের জমাট দ্রবীভূত হলে উৎপাদিত হয়। পরীক্ষাটি প্রাথমিকভাবে রক্ত ​​জমাট বাঁধা বা থ্রম্বোসিস (thrombosis) সম্পর্কিত অবস্থা নির্ণয় বা বের করতে সাহায্য করে।

ডি ডাইমার বেশি হলে কি হয়?

ডি-ডাইমারের উচ্চ ফলাফল একটি সক্রিয় রক্ত ​​​​জমাট বাঁধার উপস্থিতির আভাস দিতে পারে।ডি ডাইমার বেশি হলে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। যেমন উচ্চ ফলাফল ফুসফুসে রক্ত ​​​​জমাট বাঁধার ইঙ্গিত দিতে পারে।

Leave a Comment